ভালবাসার জন্য সময় নিন কিন্তু ফাঁদে পড়বেন না - জানা দরকারি - Jana Dorkari

Breaking

Search


বৃহস্পতিবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৪

ভালবাসার জন্য সময় নিন কিন্তু ফাঁদে পড়বেন না

ভালবাসা প্রকাশের জন্য সময় নিন কিন্তু একতরফা ভাল লাগার ফাঁদে পড়বেন না

এই প্রবন্ধটি লিখেছেন Love 343

⚠️Warning: 13+ Content only

Disclaimer: This blog article is written to analyze the topic related to a social issue. This article is not written with the intention of influencing anyone's personal life. This article is not written with the intention of hurting the religious and social sentiments of any person, group or society. If you have any comments or complaints about this article, please contact us by visiting the Contact Us page of our website.

একতরফা ভালবাসা, একমুখী প্রেম এই শব্দগুলোর সঙ্গে এখন সবাই মোটামুটি পরিচিত। আসলে ভালবাসা কখনো একতরফা হয় না। ভালবাসার আগে ভালো লাগা হয় তবে সবসময় ভালো লাগবে এমন কোনো কথা নেই। দুজনের চরম ঘৃণাও একসময় ভালবাসায় পরিণত হয়। ভালবাসা খুবই বিষম বস্তু, এটা কোনো বিশেষ কোনো ফর্মুলা মেনে চলে না। তবে একজন নারীকে কোনো পুরুষের ভালো লাগতে পারে, আবার একজন পুরুষকে কোনো নারীর ভালো লাগতে পারে। 



This image has generated by Leonardo AI

একজন মানুষকে কেন অন্য মানুষের ভালো লাগতে পারে? এর পেছনে অসংখ্য কারণ থাকলেও কতগুলো বিশেষ কারণের কথা এখানে উল্লেখ করছি। নারী এবং পুরুষের দৈহিক সৈন্দর্য্য, অন্যের প্রতি আচরণ, কথা বলার ধরণ, ধৈর্য নিয়ে কথা শোনা, আত্মবিশ্বাস এবং নেতৃত্ব দেওয়া, জটিল পরিস্থিতিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা, খেলাধূলা সহ পরিশ্রমশীল কাজ করার ক্ষমতা, শিক্ষা এবং কাজের অভিজ্ঞতা, .  আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হওয়া, পোশাক পরিচ্ছেদ এবং রূপচর্চার প্রকৃতি ।

জীবনে চলার পথে আপনার অনেক নারী বা পুরুষকেই ভালো লাগবে। তাদের মধ্যে বিশেষ কারোর প্রতি আপনার ভাললাগাকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে শুরু করবেন। তাকে নিয়ে আকাশকুসুম চিন্তা করতে থাকবেন। তাকে নিয়ে ভবিষ্যত স্বপ্ন দেখতে শুরু করবেন। তার সোশ্যাল মিডিয়া প্রতিটি পোষ্টগুলো দেখবেন। যদিও বা এসব স্বাভাবিক অর্থাৎ ভালবাসার পূর্ব লক্ষণ হিসাবে ধরলেও একটা প্রশ্ন আপনার মনে অবশ্যই আসা উচিত যে আপনি কি একতরফা ভালো লাগার মোহে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ছেন না?



যাকে আপনার ভালো লাগে তার বন্ধু হওয়ার চেষ্টা করে। যদি তিনি আপনার বন্ধুত্বের সম্পর্ক তৈরী করতে না পারেন তাহলে অতি দ্রুত এই ভালো লাগা থেকে বেরিয়ে আসুন। নিজের পড়াশোনা অথবা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকুন এবং পরিবার পরিজনদের প্রতি মনযোগী হন। যদি আপনার ভালোলাগা নারী বা পুরুষের সঙ্গে আপনার বন্ধুত্ব হয় তাহলে তার সঙ্গে স্বাভাবিক আচরণ করুন। যে কোনো সম্পর্কের মধ্যে অতিরিক্ত অগ্রাসী মনোভাব, নিজের মতামতকে জোর করে চাপিয়ে দেওয়া, অন্যকে অতিরিক্ত নিয়ন্ত্রন করতে চাওয়া এবং চাহিদাযুক্ত হলে সেটা বেশিদিন স্থায়ী হয় না। সম্পর্কের গভীরতায় যাওয়ার আগে একটা জিনিস মনে রাখতে হবে যে প্রত্যেক নারী এবং পুরুষের নিজস্ব একান্ত ব্যাক্তিগত একটি স্পেস থাকে এবং থাকা উচিত। সেই ব্যাক্তিগত স্পেসে যেমন অন্যকে অধিকার প্রয়োগ করতে দেবেন না তেমনি আপনিও অন্যের সেই ব্যাক্তিগত স্পেসের প্রতি আগ্রহ প্রকাশ করবেন না। কারণ এক্ষেত্রে সামান্য ভুল বোঝাবুঝির কারণে একটি ভালো সম্পর্ক প্রাথমিক স্তরেই ভেঙ্গে যাওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায়। 

যদি আপনি কোনো নারী অথবা পুরুষের সঙ্গে স্বাভাবিক বন্ধুপূর্ণ সম্পর্ক তৈরী করেন তাহলে আপনি সহজেই জানতে পারবেন যে সে অন্য কোন কারোর সঙ্গে বিশেষ রিলেশনশিপে আছে কিনা। সে অন্য কারোর সঙ্গে রিলেশনশিপে থাকুক বা না থাকুক আপনি যে তাকে পছন্দ করেন সেটা একসময় অবশ্যই তাকে সরাসরি জানাবেন। আপনার বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই আশংকায় যদি আপনি আপনার মনের কথা তাকে খুলে না বলেন তাহলে আপনি পুনরায় সেই একতরফা ভালবাসার ফাঁদে পা দেবেন। 

This image is generated by Leonardo AI

আপনি কাউকে প্রোপোজ করার পরে তিন ধরনের উত্তর পেতে পারেন। এক- তিনি সরাসরি না করে দেবেন, দুই- তিনি আপনার কাছে তার জবাব দেওয়ার জন্য সময় চাইবেন, তিন - তিনি আপনার ভালবাসার প্রস্তাবকে স্বীকার করবেন। এখানে তিন ধরনের উত্তরের মধ্যে দুই নম্বরটি সবচেয়ে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ। আপনি তার উত্তরের জন্য কতদিন অপেক্ষা করবেন? আপনি নিশ্চয় বারবার তার জবাবের জন্য তাগাদা দিতে পারবেন না কারণ এতে সম্পর্ক নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আপনাকে স্বাভাবিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক টিকিয়ে রাখতে হবে এবং তার জবাবের জন্য হয়ত বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে। দীর্ঘদিন অপেক্ষা করার পরেও যদি আপনি তার কাছ থেকে কোনো উত্তর না পান অথবা তার জবাব যদি না হয় তাহলে আপনার সম্পূর্ণ ব্রেক আপের মত ফিলিংস হবে। তাই এক্ষেত্রে আপনার ওপরে নির্ভর করছে যে আপনি তার জন্য কতদিন অপেক্ষা করবেন। আপনার অপেক্ষার সময় পেরিয়ে যাওয়ার পরেও তার কাছ থেকে উত্তর না পেলে নতুন কারোর সঙ্গে সম্পর্ক তৈরির দিকে মনযোগ দিন অথবা সবথেকে ভালো হয় বেশ কিছুদিন সিঙ্গেল থেকে নিজের উন্নতি সাধনের দিকে গুরুত্ব দিন।

এবার আমি এক নম্বর উত্তর নিয়ে আলোচনা করবো অর্থাৎ যদি তিনি আপনার প্রস্তাবে সরাসরি না করে দেন। তাহলে আপনি কি করবেন? অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, যিনি প্রপোজ করেছেন অথবা যাকে প্রোপোজ করা হয়েছে এই দুজনের মধ্যে একজন ভদ্রতার খাতিরে বা অস্বস্তিভাব কাটাতে শুধু বন্ধুত্বের সম্পর্কের প্রস্তাব দিয়ে থাকে -- "এখন থেকে We are just friend" । আপনি বন্ধুত্বের প্রস্তাব স্বীকার করে নিলেন। কিন্তু তারপরে আপনাকে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরিবর্তে তার কাছ থেকে বেশ কিছুটা দূরত্ব বজায় রেখে চলতে হবে। কারণ অনেক সময় এই বন্ধুত্ব পুনরায় একতরফা ভালবাসায় পরিণত হয়ে যায় এই আশায় যে হয়ত আবার সে আমার কাছে ফিরে আসবে। অনেকে আবার এরকম ভুল করে যে, বেশ কিছুদিন বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পরে পুনরায় প্রোপোজ করে বসে। তখন পরিস্থিতি হয়ত এতটাই তিক্ত হয়ে যায় যে পরবতীতে ওই বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কটাই আর থাকে না। আমাদের সমাজে প্রেম ভালবাসা সম্পর্কিত যত অপরাধ এবং বিয়োগান্তক ঘটনা ঘটে তার মধ্যে এটি অন্যতম কারণ হয়। 

Image source: Freepik.com

একতরফা ভালবাসা অনেক সময় জটিল সম্পর্কের সমীকরণ তৈরী করতে পারে। ভালবাসা অথবা বৈবাহিক সম্পর্ক ছাড়াও নারী পুরুষ শারীরিক চাহিদার জন্য যৌনতায় লিপ্ত হতে পারে। কিন্তু সেখানে যদি নারী অথবা পুরুষের মনে একমুখী ভালবাসা থাকে তবে সেটা পরবর্তীকালে তার জন্য মানসিক বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। আধুনিক সমাজে পরকীয়া সম্পর্কের কথা এবং খবর এখন হামেশাই শোনা যায়। যেসব কারণে পরকীয়া সম্পর্ক তৈরী হয় তার মধ্যে একটি অন্যতম কারণ হল "একতরফা ভালবাসা এবং শারীরিক চাহিদা"।


Image source: freepik.com

একতরফা ভালবাসা অথবা মিথ্যা বন্ধুত্বের অভিনয় নয় বরং প্রেমের প্রস্তাব খারিজ হলে নিজেই দূরত্ব তৈরী করে নেওয়া উচিত। একতরফা ভাললাগা বা ভালবাসা অনেক সময় মানুষের মনে প্রচন্ড আবেগ তৈরী করে। আবেগের বশে মানুষ হঠকারী এবং ভুল সিদ্ধান্ত নেয় এবং এমনকি প্রতারিত হওয়ার সম্ভাবনাও তৈরী হয়। একতরফা ভালবাসায় মানুষের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট হয়, পরিবার এবং সমাজের প্রতি তার দায়িত্ববোধের অভাব দেখা যায়। একতরফা ভালবাসার মোহ থেকে যত দ্রুত সম্ভব বেরিয়ে আসা উচিত। নিজেকে যুক্তিবাদী এবং বাস্তববাদী করে তুলুন যাতে পরবর্তীকালে নিজেই সিদ্ধান্ত নিতে পারেন যে আপনার জন্যে কোনটা জাস্ট ভাললাগা এবং কোনটা প্রকৃত ভালবাসা।

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.