গ্লোবাল ট্যরিফ যুদ্ধ কি সমুদ্রের ঢেউ না বিধ্বংসী সুনামি - জানা দরকারি - Jana Dorkari | Online Bengali News portal

Breaking

শনিবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৫

গ্লোবাল ট্যরিফ যুদ্ধ কি সমুদ্রের ঢেউ না বিধ্বংসী সুনামি

গ্লোবাল ট্যারিফ যুদ্ধ শুরু করে উন্নত দেশগুলি কি করতে চাইছে?

বিশ্বজুড়ে এক নতুন অর্থনৈতিক যুদ্ধ শুরু হয়ে গেছে। আর এটা শুরু হয়েছে ট্যারিফ যুদ্ধের মধ্য দিয়ে। আর এতে আমেরিকা এগিয়ে না চীন এগিয়ে এগুলো নিয়ে কোনো আলোচনা করা রীতিমত এখন সময়ের অপচয়। এখন প্রায় প্রতিটি মুহুর্তে এই দুই দেশ তাদের মধ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিচ্ছে। আর অন্যদিকে আমেরিকা থেকে নব্বই দিনের ছাড় পেয়ে আমরা উন্নয়নশীল বা অনুন্নত দেশগুলি বসে যদি আমরা ভাবতে থাকি যে দুই ষাঁড়ের মধ্যে লড়াই হচ্ছে তাতে আমাদের কি? আমরা গ্যালারিতে বসে লড়াই দেখি আর পপকর্ণ উপভোগ করি তাহলে বলবো যে সেই প্রবাদ প্রবচনের কথা মনে করুন ঘুঁটে পোড়ে গোবর হাসে। 


তাহলে সত্যি সত্যিই কি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক সংকট শুরু হয়ে গেছে? আজ সারা পৃথিবী জুড়ে যত চাকরি ছাঁটাই হচ্ছে সে বেসরকারি চাকরি হোক কিংবা সরকারি চাকরি, ছাঁটাইয়ের ঘটনা যদি গভীর ভাবে বিশ্লেষণ করা যায়, তাহলে দেখা যায় যে নব্বই শতাংশ ক্ষেত্রে ছাঁটাইয়ের কারণ হলো এই অর্থনৈতিক সংকট।

এখন হয়ত কর্মী সংকোচন করে বিভিন্ন বেসরকারি অথবা সরকারি সংস্থা অর্থনৈতিক সংকট সুনিপূণ ভাবে সামাল দিচ্ছে। কিন্তু অর্থনৈতিক সংকট একটা চক্রকার প্রক্রিয়া। এটা একবার শুরু হওয়ার পর শুরুর দিকে যদি সমস্যার সমাধান না করা হয় তাহলে পরিস্থিতি একসময় হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। 

কিছুদিন আগে জানা দরকারির একটি লেখায় আমি বাণিজ্যতন্ত্রের কথা উল্লেখ করেছিলাম। এখন পুজিবাদ সর্বত্র। কোনো দেশে রাষ্ট্রীয় পুজিবাদ, কোনো দেশে বাণিজ্যিক পুজিবাদ। এদের মধ্যে কেউ কমিউনিজমের ছদ্মবেশে আছে, কেউ সমাজতন্ত্রের ছদ্মবেশে, কেউ বা গনতন্ত্রের ছদ্মবেশে। এর বাইরে কোনো ফর্মুল নেই আর থাকা সম্ভবও না। এটাই আধুনিক বাণিজ্যতন্ত্র।

তাই যতদিন ব্যবসা বাণিজ্য ঠিকভাবে চলছে এবং পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ বা গোষ্ঠী বাণিজ্য থেকে যথেষ্ট মুনাফা অর্জন করতে পারছে ততদিন যত বাণিজ্য ট্যারিফ বসানো হোক না তা পরিস্থিতি স্বাভাবিক বলে ধরে নেওয়া যেতে পারে। কিন্তু যখনই বিভিন্ন ক্ষমতাশীল দেশের অর্থনীতি এবং মুনফায় টান পড়বে, ব্যাঙ্কগুলি দেউলিয়া হতে শুরু হবে তখনই বিপত্তির সৃষ্টি হবে। তখন বিশ্বের বিভিন্ন অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে বিবাদ এবং বিবাদ থেকে যুদ্ধের সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। কারণ অনুন্নত এবং উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে অধিকংশই কোন না কোন উন্নত ক্ষমতাশীল রাষ্ট্র বা গোষ্ঠীর উপরে নির্ভরশীল। অর্থাৎ উন্নত রাষ্ট্রগুলি একে অপরের বিরুদ্ধে ছায়াযুদ্ধ করবে। 

উন্নত এবং ক্ষমতাশীল রাষ্ট্রগুলো যতদিন নিজেদের সংযত রেখে যুদ্ধ এড়িয়ে চলতে পারবে ততদিন পৃথিবীর মানবাজাতির জন্য ভালো। আর যুদ্ধ করলে যে আখেরে নিজেদেরই ক্ষতি সেটা পৃথিবীর অনেক দেশ এবং গোষ্ঠী বুঝতে পেরেছে। তাই তারা এখন বাণিজ্য যুদ্ধে এবং কখনো ছায়া যুদ্ধে মেতেছে।

কিন্তু ভবিষ্যতে  বিপদের সম্ভাবনা অন্যদিকে। ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে পৃথিবীতে এখন ধীরে ধীরে খাদ্য, পানীয়জল এবং বাসস্থানের সংকট দেখা যাচ্ছে। আর এই সংকট চক্রকারে শুরু হওয়ার আগে থামাতে বা মোকাবিলা না করতে পারলে আগামী দিনে নিশ্চিতভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মানুষ তাদের খাদ্য, পানীয় জল এবং বাসস্থানের চাহিদা মেটানোর জন্য বিভিন্ন মারণাস্ত্র নিয়ে মহাযুদ্ধে নেমে পড়বে।

কোন মন্তব্য নেই: