যে সাতটি খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় থাকলে হাড় মজবুত হতে সাহায্য করবে - জানা দরকারি - Jana Dorkari | Online Bengali News portal

Breaking

শুক্রবার, ১২ এপ্রিল, ২০২৪

যে সাতটি খাবার আপনার খাদ্য তালিকায় থাকলে হাড় মজবুত হতে সাহায্য করবে

শরীরের হাড় মজবুত রাখতে যে সাতটি খাবার আপনার ডায়েট লিস্টে রাখবেন-

আমাদের শরীরে হাড়ের মূল উপাদান হলো ক্যালশিয়াম। আমরা প্রতিদিন যে খাবার গ্রহণ করি সেগুলি থেকে ক্যালশিয়াম শোষণ হয়। ভিটামিন ডি শরীরে ক্যালশিয়াম শোষনে সাহায্য করে থাকে। ক্যালশিয়াম আমাদের হাড়ের ক্ষয় প্রতিরোধ করে হাড় মজবুত রাখে। হাড়ের মধ্যে শরীরের প্রায় 98% ক্যালশিয়াম থাকে। তবে অনেক সময় বয়সজনিতে এবং শারীরিক অসুস্থতার কারণে শরীরে ক্যালশিয়ামের মাত্রা কমে যেতে পারে। ফলে শরীরে দুর্বলতা দেখা যায়।

ক্যালশিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণঃ

শারীরিক অসুস্থতার কারণে শরীরে ক্যালশিয়ামের মাত্রা অতিরিক্ত কমে গেলে দুর্বলতা, মাংসপেশিতে টান, জয়েন্টে ব্যাথা, উচ্চ রক্তচাপ, দাঁতের এবং নখে সমস্যা, শুষ্ক ত্বক, অনিয়মিত হৃদস্পন্দন, অতিরিক্ত ঘুম পাওয়া, সবসময় ঝিমুনি ভাব, অবসাদ ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়। তাই এই সমস্ত লক্ষণ দেখা গেলে অতিদ্রুত ডাক্তারের কাছে পরামর্শ নিতে হবে এবং প্রয়োজনে চিকিৎসা করাতে হবে। 

ক্যালশিয়াম সমৃদ্ধ খাদ্য
Calcium rich foods
Image by Racool_studio on Freepik 

দৈনিক ক্যালশিয়ামের চাহিদাঃ

আমাদের প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় 700mg-1000mg ক্যালশিয়াম থাকা প্রয়োজন। তবে বয়স, লিঙ্গ এবং শারীরিক অবস্থার ওপরের ক্যালশিয়াম গ্রহনের পরিমাণ নির্ভর করে। আপনার সন্তানের বয়স যদি 14 থেকে 18 এর মধ্যে হয়, তাহলে এই বাড়ন্ত বয়সে তার খাদ্যতালিকায় ক্যালশিয়ামের পরিমাণ একটু বেশী থাকবে (1300mg)। অন্যদিকে গর্ভাবস্থা এবং সন্তানের জন্ম দেওয়ার পর মহিলাদের বেশী ক্যালশিয়ামের প্রয়োজন হয়। সেক্ষেত্রে খাদ্য গ্রহণের পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ মত ক্যালশিয়ামের সাপ্লিমেন্ট নিতে হয়। বাড়িতে বয়স্কদের ক্ষেত্রেও 1200mg ক্যালশিয়ামের প্রয়োজন হয় তবে তাদের ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলা উচিত। 

এই সাতটি খাবার আপনার খাদ্যতালিকায় রাখলে শরীরে অনেক বেশী ক্যালশিয়ামের যোগান দেবে-

দুধঃ

দুধ একটি পুষ্টিকর খাদ্য। 250 মিলিলিটার দুধে প্রায় 300 মিলিগ্রাম ক্যলশিয়াম থাকে। প্রতিদিন এক গ্লাস বা এক কাপ দুধ শরীরে ক্যালশিয়ামের ঘাটতি অনেকটা পূরণ করে। 

Milk
দুধ
 image credit: Pexels.com

ডিমঃ

ডিম অবশ্যই একটি পুষ্টিকর প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য। ডিম শরীরে প্রোটিন, ভিটামিন, ফ্যাটের পাশাপাশি ক্যালসিয়ামের যোগান দেয়। প্রতি 100 গ্রাম ডিমে 50-70 মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। 

Egg for good health
সেদ্ধ ডিম
Image Credit: Timolima

সয়াবিনঃ

সয়াবিন নিরামিষভোজীদের জন্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য। 100 গ্রাম সয়াবিনে প্রায় 277 মিলিগ্রাম পরিমাণ ক্যালশিয়াম থাকে। এছাড়া সয়াবিনে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, সোডিয়াম এবন প্রোটিন পাওয়া যায়। 

সয়াবিন পুষ্টিকর খাদ্য
সয়াবিন দানা


রাজমা ডালঃ

রাজমা বা কিডনী বিন একটি অতি পরিচিত ডাল যা ভাতের সঙ্গে খাওয়া হয়। রাজমা ডালে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম, ভিটামিন C, B এবং D, সোডিয়াম এবং ক্যালশিয়াম থাকে। 100 গ্রাম রাজমা ডালে প্রায় 146 মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। 


রাজমা ডাল
রাজমা ডাল
Image by jcomp on Freepik


পালং শাকঃ

শীতের মরশুমে একটি জনপ্রিয় সবজি হলো পালং শাক। 100 গ্রাম পালং শাকে প্রায় 99 মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। এছাড়া পালং শাকে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, ভিটামিন B, C, D এবং সোডিয়াম থাকে। তবে যাদের ইউরিক অ্যাসিড এবং কিডনীর সমস্যা হয়েছে তারা পালং শাক খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন। 


পালং শাক
পালং শাক
Photo by Elianna Friedman on Unsplash


ভেন্ডিঃ

ভেন্ডি বা ভিন্ডি বা ঢ্যাঁড়শ একটি কম জনপ্রিয় সবজি। কিন্তু ভেন্ডি, সরষে এবং পোস্ত বাটা দিয়ে রান্না খেতে অসাধারণ হয়। 100 গ্রাম ভেন্ডিতে প্রায় 111 মিলিগ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। এছাড়া ভেন্ডিতে ফাইবার, প্রোটিন, পটাশিয়াম, ফসফরাস, জিঙ্ক, ভিটামিন A, E এবং C পাওয়া যায়। 


ভেন্ডি বা ঢ্যাঁড়শ
ঢ্যাঁড়শ 
Photo by Prateek Nuti


কাঠবাদামঃ

কাঠবাদাম এবং আমন্ড একটি পুষ্টিকর শুকনো ফল। অনেকে সকালে এটি খালি পেটে অথবা বেটে নিয়ে দুধের সঙ্গে সেবন করেন। আমন্ডে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, উপকারী ফ্যাট, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, জিঙ্ক, কপার, ম্যাঙ্গানিজ, সোডিয়াম পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম, আয়রন এবং কপার ইত্যাদি উপাদান থাকে। আমন্ড রক্তচাপ, কোলেস্টেরল, রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রনে এবন শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। এছাড়া এটি ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখতে সাহায্য করে। প্রতি 100 গ্রাম কাঠাবাদাম বা আমন্ডে প্রায় 266 গ্রাম ক্যালশিয়াম থাকে। 

আমন্ড বাদাম
কাঠবাদাম
Photo by Irina Iriser:

শরীরে প্রয়োজনীয় ক্যালশিয়ামের জন্য উপরের খাবারগুলির সঙ্গে ভিটামিন D এভং ভিটামিন C পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রতিদিন খাবারে রাখতে হবে। না হলে খাবার থেকে শরীরে পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালশিয়ামের শোষন হবে না। আপনার শরীরে ভিটামিন D -এর অভাব হলে অতিদ্রুত চিকিৎসকের নিকট যোগাযোগ করুন। 

কোন মন্তব্য নেই: