জ্ঞানযোগঃ আপনার জীবনে সবকিছুই সাময়িক তবে... - জানা দরকারি - Jana Dorkari

Breaking

Search


বুধবার, ৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

জ্ঞানযোগঃ আপনার জীবনে সবকিছুই সাময়িক তবে...

জ্ঞানযোগঃ আপনার জীবনে সবকিছুই সাময়িক  তবে...

আপনি আপনার জীবনে যত অর্থ সম্পদ অর্জন করুন না কেন আপনার মৃত্যুর পরে কোন কিছুই আর আপনার থাকবে না। সেটা অন্য কারো হয়ে যাবে। তাহলে এই সম্পদের পেছনে ছোটাছুটি কেন? সংসার বিশেষজ্ঞরা বলে থাকেন তা ভবিষ্যতের জন্য অথবা ভবিষ্যত প্রজন্মদের জন্য। কিন্তু ভবিষ্যত প্রজন্ম আপনার অর্জন করে রেখে যাওয়া সম্পদ কতটা ভালভাবে ব্যাবহার করতে পারবেন সে বিষয়ে কিন্তু প্রশ্ন রয়ে যায়। 



উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি বড়ই লোভনীয়, কেউ বলেন আশীর্বাদস্বরূপ। পরিশ্রম ছাড়াই অর্জিত উত্তরাধিকার সম্পত্তি ব্যাবহারের সঠিক পদ্ধতি না জানলে, আপনার ভবিষ্যত প্রজন্ম ভুল পথে পরিচালনা করলে সম্পত্তি ধ্বংস হতে বাধ্য। তাই মানুষের শিক্ষা এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করা খুবই দরকার। শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা মানুষকে সঠিক পথ দেখায় না। মানুষের জীবনে বাস্তব অভিজ্ঞতা ভীষণ প্রয়োজন। বাস্তব জীবনের অভিজ্ঞতা সম্পদ অর্জন এবং তার সঠিক ব্যাবহারের পথ দেখায়। 

তাই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি আপনার সন্তানের যাতে বাস্তব জীবনে চলার জন্য জ্ঞান অর্জন করতে পারে সেদিকে আপনাকে নজর দিতেই হবে। 

জ্ঞান এবং কর্ম অতি অমূল্য সম্পদ। আপনার অস্তিত্ব একদিন বিলুপ্ত হয়ে যাবে। কিন্তু আপনার অর্জিত জ্ঞান এবং সৎ কর্মের সুফল ভবিষ্যতের পৃথিবী উপলব্ধি করতে পারবে। ভবিষ্যত প্রজন্ম আপনাকে সন্মানের সঙ্গে স্মরণ করবে। 

অর্থ সম্পদ ছাড়া এই পৃথিবীতে এখন জীবনধারণ করা অসম্ভব। যারা আপনাকে অর্থ উপার্জন থেকে নিরুৎসাহিত করে তাদের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলুন। তবে আপনাকে সঠিক পথে উপার্জন করতে হবে। অর্থের প্রতি মাত্রারিক্ত ললসা এবং বিপথে অর্থ উপার্জন মানুষের জ্ঞান চর্চাকে নষ্ট করে দেয়। সঠিক জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা না থাকলে আপনি চাকরি বা ব্যাবসা কোনটাই ঠিকভাবে করতে পারবেন না। আপনার পরিশ্রম দ্বারা অর্জিত অর্থ সম্পদের সঠিক ব্যাবহার এবং ব্যায়ে সংযম শিখতে হবে। 

আপনি ধনী, মধ্যবিত্ত বা গরিব যাই হোন না কেন নিয়ন্ত্রিত এবং সংযমী জীবনযাপন করুন। অসংযমী জীবন মানুষকে এমন ভুলের ফাঁদে নিয়ে যেতে পারে যেখান থেকে বেরিয়ে আসতে চাইলে আপনার জীবনের অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ বছর নষ্ট হয়ে যেতে পারে। আপনি শতকোটি চেষ্টা করলেও এই সময় নষ্টের পাপ থেকে উদ্ধার পাবেন না। সময় আমাদের সবচেয়ে বড় অভিভাবক এবং শিক্ষক।

আপনার জীবনে সবকিছুই সাময়িক যেমন সম্পর্ক, অর্থসম্পদ এবং শরীর স্বাস্থ্য ইত্যাদি। তাই অহংকার এবং ক্ষতিকারক চিন্তা গুলিতে লাগাম লাগাতে হবে। কারণ সময় আপনার অহংকারকে একদিন ঠিকই কেড়ে নেবে। তাই বিনয়ী হোন, বিনয়ী হওয়া মানে কিন্তু দুর্বলতা নয়। আপনার আত্নসন্মান এবং আত্নমর্যদাবোধ অবশ্যই দৃঢ় থাকতে হবে। সংসারী মানুষের পক্ষে সবসময় দুশ্চিন্তামুক্ত থাকা সম্ভব নয় তবু আপনার মনকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন। 


বিভিন্ন স্থানে সপরিবারে ভ্রমণ করুন। বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে বা কার্যকালাপে অংশগ্রহণ করার চেষ্টা করুন। এগুলো বাস্তব জ্ঞান বাড়াতে সাহায্য করে। শহর এবং মফস্বলে যারা থাকেন তারা মাঝে মাঝে সবুজ প্রকৃতির সংস্পর্শে আসার চেষ্টা করুন। সবুজ প্রকৃতি অনেক সময় আপনার মানসিক চাপ কমাতে সাহায্য করে। আপনি যত মানসিক চাপমুক্ত হবেন শারীরিক ভাবে তত কর্মক্ষম থাকবেন। 

বর্তমান সময়ে প্রায়শই দেখা যায় যে, আমাদের মধ্যে অনেকেই অনিরাময়যুক্ত বিভিন্ন ধরনের রোগে ভুগছেন এবং চিকিৎসকদের পরামর্শমত নিয়মিত ওষুধ সেবন করছেন রোগকে নিয়ন্ত্রনে রাখার জন্যে। অনিরাময়যুক্ত রোগের পেছনে অনেক কারণ থাকে যেগুলো হয়তো প্রতিরোধ করা সবসময় সম্ভব হয় না। তবে আপনি আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাগুলি বাড়ানো জন্য নিয়মিত সুস্থ জীবনধারা মেনে চলুন। কারণ, আগেই বলেছি যে, আপনার জীবনে সবকিছুই সাময়িক সুতরাং...

 
লেখকঃ কৌশিক সরকার

কোন মন্তব্য নেই:

Blogger দ্বারা পরিচালিত.